Sunday, May 22, 2016

এমন লক্ষী বউ কে না চায় (সুপার রোমান্টিক)





ভোর ৬টা
ঘুমিয়ে আছি.... হঠাৎ শিতল ঠোটের স্পর্শে দেহের শিরা উপশিরা গুলো কম্পিত হতে লাগল,চোখ খুললাম!
দেখি আমার পরিটা মুচকি মুচকি হাসছে
(ভালবাসার মানুষগুলোর ছোয়ার মাঝে এক ধরনের অদ্ভত.... ভাললাগা বিরাজমান!যা কারও কাছে ইলেকট্রিক সর্ট আবার কারও কাছে সাগরের অতলের মত )
.
-- এই ওঠো! অনেক সকাল হয়ছে!
-- হুম(ঘুমিয়েই)
--হুম না ওঠো!
--যাচ্ছ কোথায়? একটু বুকে আসোনা গো!
-- আহা... কি করছো? সবসময় দুষ্টমি করতে হয়! ?
আমার মাথার চুলগুলো এলোমেলো করে দিলো...
--হুম! আর সেটা তোমার সাথেই!
--এই এখন ছাড়ো... ফ্রেশ হয়ে এসো! যাও
-- যাচ্ছি তার আগে একটু আসো তো
এইবলেই আমার পরীটাকে বুকে জড়িয়ে নিলাম, খুব শক্ত করে
ওর ভেজা চুল,চুলগুলো থেকে এক ধরনের অদ্ভুত ঘ্রাণ বের হচ্ছে! যা ঘরটিকে মাতিয়ে তুলছে!
.
--এই এখনতো ছাড়ো।
-- আরেকটু প্লীজ।!!!!!!
--নাহ ছাড়ো!
আমি এবার আরও শক্ত করে ওর দুহাত চেপে ধরলাম!
তারপর নাকের ডগাটা ওর নাকের সাথে ঘসা দিলাম.....
ও আমার বুকের ওপর কয়েকটা কিল ঘুসি মেরে পালালো!
আর যাবার সময় জিব্বাহ কেলিয়ে গেল..... মনে হচ্ছে আমাকে পরে দেখে নিবে!
.
ফ্রেশ হয়ে... দেখি বউ রান্না ঘরে...
মেয়েটি...ছাপা শাড়ি পরে আছে, আচলটা কোমরে গোজা! চুল গুলো খোলা অবস্থায় মাথার সাথে ছোট করে আটকে রাখা! দেখতে তো সেই লাগছে! নাহ আর থাকা যায়না!
.
আস্তে আস্তে গিয়ে পেছন থেকে ওরে যাপটে ধরলাম...
--হুহুহুহু! আবার শুরু করলে?
-- হুম আসলে তোমাকে খুব সুন্দর লাগছেতো তাই আর লোভ সামলাতে পারলাম নাহ! হিহিহি
--ও তাই?
--হুম ঠিক তাই!
--ওওও তাহলে এখন ছাড়ো! রুটি পুরে যাবেতো
এই বলেই আমাকে চিমটি কাটলো!
.
আমি হাল ছেড়ে দিয়ে... রুমে চলে আসলাম!
.
কিছুক্ষণপর
-- এই খেয়ে নাও খাবার রেডি!(চিল্লানি দিয়ে )
--আসতেছি
তারাতাড়ি আসো?
.
এসে দেখি পরিটা খাবার নিয়ে বসে আছে!
--তুমি বস! আমি আসছি!
--কোথায় যাচ্ছ আবার?
ওর হাতটা ধরলাম
-- তুমি শুরু করো! আমি এই যাবো আর আসবো!
--নাহ! একসাথে খাবো!
-- ওকে বাবা আসতেছি...পাগল একটা
এবলেই আমার খাড়া নাকটা বোচা করে দিল!
.
.
চোখাচোখি বসে আছি..দুজনে
-- এই পরি খাইয়ে দাওনা?
-- নিজে খেতে পারোনা? দিন দিন কি আরও ছোট হয়ে যাচ্ছ যে খাইয়ে দিতে হবে?
--নাহ পারছিনা! তুমি খাইয়ে দাও!
--পারবনা!
--ওকে! তুমি না খাইয়ে দিলে আজ খাবোইনা!(অভিমানী সুরে)
--অমনি হয়ে গেল তাইনা
---...............
...
এখন ও আমাকে খাইয়ে দিচ্ছে!আহ হাহা বউয়ের হাতে খাওয়ার মজাই আলাদা!
(
মাঝে মাঝে রাগ থেকে যদি হয় দারুন কিছু তো রাগই ভাল!)
.
--বাহ দারুন হয়ছে
--সত্যি(মন ভুলানো হাসি দিয়ে)
--হুম
প্রত্যেকটি মেয়েই চায় কিনা জানিনা... হয়তো চায়, যে তার সকল কিছুর প্রশংসা করুক, তাও আবার তার ভালবাসার মানুষটি!
.
এক টুকরো রুটি ছিড়ে....
--এই পরি হা করো
-- আগে তুমি খাওতো তারপর আমি খাচ্ছি!
--নাহ..! হা কর প্লিজ!
--ওকে...
ও আমার হাতটি ধরে... গলগদ্ধকরন করল!
--এই পাগলি কাদছো কেন হুম!?
--ও কিছুনা! এমনিতেই চোখে পানি এসে গেল!
-- দেখি...
ওর চোখের জল গুলো মুছে দিলাম... জানি এই জলটার মূল্য কতখানি! মাঝে মাঝে এই জলই তো বলে নিরবে প্রকাশ করে... ভালবাসি কতটুকু, ভালাবাসা যায়!
.
এরপর ওকেবুকে টেনে নিলাম........
.
এসময় একটা কথায় মনে পরছে....
ভালবাসা ভালবাসে শুধুই তাকে
ভালবেসে ভালবাসায় বেঁধে যে রাখে!!
.
.

Saturday, May 21, 2016

জ্বলন্ত রোম্যান্টিক






-বাবু রুমডেট করতে সমস্যা টা কোথায়? -
না আমি পারব না।
-কিন্তু কেনো?
-দেখ হিমেল বিয়ের আগে এইসব অবৈধ।
-আমরা তো বিয়ে করবই।তো সমস্যা
কোথায়? -এইটাই তো কথা বিয়ে তো
করবোই তা না হয় বিয়ের পরেই।
-(হিমেল ভাবনার হাতটা ধরে) আচ্ছা
তুমি কি আমাকে ভালবাসনা? -হুমম।
অনেক।
-আমাকে বিশ্বাস কর না। -(মুখটা
ফিরিয়ে) হুমম।
-তাহলে এমন করছ কেন?
-তুমি বুঝতে পারছ না কেন বিয়ের
আগে এইসব ঠিক না।
-ওকে ফাইন তুমি থাক তোমার বিয়ে
নিয়ে। আমাকে ভুলেও আর কোনদিন
ফোন দিবে না। তোমার সাথে ব্রেক-
আপ।
.
কথাটা বলে চলে যাচ্ছিল হিমেল এমন
অবস্থায় এক ধাপে হিমেলের হাতটা
আকড়ে ধরে ভাবনা। হিমেল পিছে
ফিরে তাকায়।ভাবনা মাথা নিচু করে
ফেলে।
হিমেল অবস্থা বুঝতে পেরে একটা
হাসি দেয় আর বলে:
.
-তুমি কি সত্যিই রাজি?
ভাবনা মাথাটা আরো নিচু করে।তাই
ভাবনার কথা বুঝতে পেরে হিমেল
ভাবনাকে জড়িয়ে ধরে আর পিছনে
দূরে দাড়িয়ে থাকা বন্ধুদের দিকে
হাত দিয়ে ইশারা করে ডান।
.
বন্ধুরা ভংগিমার মাধ্যমে হিমেলের
প্রশংসা করতে থাকে।তারপর
ভাবনাকে পাঠিয়ে বন্ধুদের দিকে
ছুটে যায় হিমেল।সবাই পিঠ চাপড়িয়ে
হিমেলের প্রশংসা করতে থাকে। -
মানতে হবে বস তুই একখান চিজ ই।
হিমেল হাসি দেয়।তারপর বলে -২১
নাম্বারটাও হালাল হয়ে গেল। সব
বন্ধুরা হাসিতে ফেটে পরে। .
ওইদিকে ভাবনা বাসায় গিয়ে ভাবে
কাজটা করা তো ঠিক হবে না।কিন্তু ও
হিমেলকে যে অনেক বেশি
ভালবাসে।কি করা যায় ভাবতে
থাকল।
.
পরেরদিন আর কলেজে যায় নি ভাবনা।
এই দেখে হিমেল ভাবনাকে ফোন দেয়
ভাবনা ফোন ও ধরে না।রাত ৯ টার
দিকে হিমেলের মোবাইলে ফোন
আসে।ততক্ষনাক ফোনটা ধরে
-কি ব্যাপার সারাদিন ফোন দিলাম
ধরলে না কেনো?
-এমনিতেই।
-এমনিতেই কেও ফোন না ধরে নাকি?
কথাটার উত্তর দিল না ভাবনা।তারপর
হঠাৎ বলে উঠল
-তুমি কি আমার বাসায় আসতে
পারবে? -তোমার বাসায় কেন?
-বাসা খালি তো তাই।
কথাটা শুনে হিমেলের লোভি মন
জেগে গেল। -আচ্ছা কখন?
-এখনি আসো।
-আচ্ছা আসছি।
.
ফোনটা রেখে হিমেলের মুখ দুষ্ট
হাসিতে ভরে উঠল।তারাতারি বাসা
থেকে বের হলো ভাবনার বাসার
উদ্দেশ্যে।
১০ মিনিটের ভিতর ভাবনার বাসায়
পৌছে গেল। দরজা নক করে বাগানের
দিকে চাইল হিমেল। দেখল ভাবনা
দোলনায় বসে দোলছে।ওইদিকে যেতে
লাগল হিমেল।গিয়ে ভাবনাকে বলল: .
-কি ব্যাপার এইখানে এইভাবে চুল
এলোমেলো করে বসে রয়েছ কেনো?
পা দিয়ে দোলনি থামাল ভাবনা।
তারপর হিমেলের দিকে চেয়ে হাসি
দিল।হিমেল বিব্রত বোধ করল।
-চল ভিতরে চল?
-তুমি আমার দেহটা নিয়ে যেও।তারপর
যা মন চায় করো।
-(চোখ বড় করে)মানে কি?
-হিমেল তুমি কি মনে করেছ আমি
তোমার ব্যাপারে কিছু জানি না।
তোমার আর ২০ টা গার্লফ্রেন্ড এর
সাথে এই একই কাজ করেছ আমি কি তা
জানি না।
-(ঘাবড়িয়ে গিয়ে)আরে না। হাতটা
উপরে উঠিয়ে ভাবনা বলল -আর বলতে
হবে না।তুমি কি জানো হিমেল আমি
তোমাকে কতটা ভালবেসেছি।আর
তুমি শুধু আমার দেহটাকে।আমি তো
আমার ভালবাসাকে তোমার ভিতরের
লোভির কাছে জিন্দা থাকতে
বিক্রি করতে পারি না।তাই একটু পর
আমার নিথর দেহটাকে নিয়ে যা মন
চায় করো। -মানে কি এইসবের?
ভাবনা হাসি দিয়ে ডান হাতের
মোঠটা খোলে। হিমেল দেখতে পায়
ভাবনার হাতে বিষের বোতল।আর
ঘাবড়িয়ে যায়।
-এটা কি?
.
মুচকি হাসি দোলনা থেকে নিচে
পরে যায় ভাবনা।তারপর মুখ দিয়ে
অনবরত ফেনা বের হতে থাকে।হিমেল
সম্পূর্ন ঘাবড়িয়ে যায়।কাতরাতে
কাতরাতে হিমেলের চোখের
সামনেই দম ফেলে দেয় ভাবনা।
.
হিমেলের শরিরে কাপুনি ধরে যায়।
তারপর নিচে বসে ভাবনার গালে
আস্তে আস্তে থাপড়িয়ে ডাক দিতে
থাকে।ডাকে সাড়া না দেওয়ায়
বুঝতে পারে ভাবনা মারা গেছে। .
হিমেল কোন কিছু বুঝে উঠার আগেই
দৌড় দেয়। গেট থেকে বের হয়ে ডান
দিকে জোড়ে দৌড়াতে থাকে।আর
ভাবতে থাকে এটা কি করলাম।একটা
নিষ্পাপের জিবন কেড়ে নিলাম। .
দৌড়চ্ছে আর মাথার চুলগুলায় হাত
দিয়ে এদিক ওদিক চাইছে।অনেক ঘাম
বের হচ্ছিল তাই ঘাম মুছতে মুছতে ল্যাম
পোস্টের দিকে চাইল।দেখতে পারল
সুমি দাড়িয়ে রয়েছে।কিন্তু সুমিও
হিমেলের কারনে ২ বছর আগে মারা
গিয়েছিল। দৃশ্যটা দেখে হিমেল
ল্যাম্পপোস্ট থেকে একটু দূরে গিয়ে
দাড়ায়।
.
সুমি বলতে থাকে:
-নাও হিমেল আমার দেহটাও নাও।
কথাটা শুনে হিমেল ভয়ে চিৎকার
করে বলতে থাকে:
-না দেহ আমি চাই না।দেহ আমি চাই
না। বলতে বলতে অচেতন হয়ে রাস্তায়
পরে রইল হিমেল।

এতো ভালোবাসা ???? নাকি ঢং !!




রাতুল এবং রাইসা স্বামী স্ত্রী, রাতুল
ছেলে হিসেবে খুবই ভালো কিন্তু একটু
অগোছালো এবং বেখায়ালি কোনো
কাজই সময় মত করে না। এদিকে রাইসা
হলো রাগি স্বভাবের।
রাত অনেক হয়ে গেছে রাইসা
ঘরে অনেক্ষন যাবত বসে আছে রাইসা,
রাতুলের আসার নাম নেই, অনেক্ষন পর তার
আগমন ঘটলো
- এতক্ষণ লাগলো তোমার আসতে?
কোথায় ছিলে?
- একটু বাহিরে গেছিলাম
- কি?? বাহিরে?
- হুম
- এখন থেকে আর বাহিরে থাকা চলবে না,
এই বলে দিলাম।
- ওকে, দেখা যাবে
তাদের বিয়ে হয়ে কয়েক মাস হয়ে গেছে,
তবে বিয়েটা লাভ ম্যারেজ।
দীর্ঘ চার বছর রিলেশনের পর তারা বিয়ে
করছে , তাদের মধ্যে ভালবাসার কোনো
কমতি নেই।
সকাল নয়টা বেজে গেছে, রাতুল অফিসে
যাবে তাই রাইসা অনেক সকাল থেকেই
রান্নার কাজে ব্যস্ত এদিকে রাতুল কেবল
ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে অফিসের জন্যে
রেডি হচ্ছে।
রান্না ঘরে গিয়ে রাইসাকে পেছন থেকে
জড়িয়ে ধরলো
- এই কি করছো! ছাড়ো বলছি
- ছাড়বো না
সামনে ঘুরে রাতুলের দিকে দাকিয়ে হেসে
দিল
- কি হলো হাসছো কেনো?
- নিজের দিকে একবার তাকাও
- নিজের দিকে তাকানোর কি আছে
- শার্টের বোতাম গুলাও তো ঠিক মতো
লাগাতে পারো নি এলো মেলো হয়ে
গেছে
- তোহ, কি হয়ছে? তুমি ঠিক করে দাও
- তোমাকে নিয়ে আর পারা যায় না, একটা
কাজও ঠিক মতো করতে পারো না। এখন
খেতে আসো।
সকালের খাবার টা খেয়ে অফিসের দিকে
রওনা হলো রাতুল।
অফিসে পৌছে রাইসা কে ফোন দিয়ে
- আমি ঠিকমতো পৌঁছেছি
- হুম, আর কোনো মেয়ের সাথে ভুলেও কথা
বলার চেষ্টা করবে না, আমি যদি জানতে
পারি তুমি কারো সাথে কথা বলেছো
তাহলে খবর আছে বলে দিলাম
- আচ্ছা বাবা রাখি।
অফিসের কাজগুলো শেষ করে বাসায় চলে
আসলো কিন্তু ফিরতে অফিস শেষের টাইম
হতে একটু দেরি হয়ে গেছে, বাসায় কলিং
বেল বাজাতেই
- এই এতো দেরি হলো কেন?
- এমনি রাস্তায় জ্যাম ছিলো
- রাস্তায় জ্যাম ছিলো নাকি কোনো
মেয়ের সাথে ঘুরতে গেছিলে?
- না, এখানেই দাড় করিয়ে রাখবে? ভেতরে
ঢুকতে দিবে না নাকি?
- আচ্ছা আসো
আসলেও রাস্তায় জ্যাম ছিলো, আর আমি
কি তোমাকে ছাড়া অন্য কাউরে চিন্তা
করতে পারি।
> হুহ, হয়ছে, আর পাম দিতে হবে না, ফ্রেশ
হয়ে নাও এখন।
বিকেল বেলা একটু ঘুমাবে তখনই রাইসা
এসে
- তুমি না বলেছিলে আজকে আমাকে নিয়ে
ঘুরতে যাবে
- ওহ, মনেই নেই
- মনে তো থাকবেই না।
- এখন চলো, সময় তো যায় নি, আর হ্যাঁ সেই
হালকা গোলাপী রং এর শাড়ীটা পড়ো
- আচ্ছা
দুজনেই রিক্সায় বসে আছে, কিন্তু কেউ কথা
বলছে না, এদিকে রাতুল রাইসার দিকে এক
দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে, তাকে আজ অসম্ভব
সুন্দর লাগছে।
- এই, কি দেখছো
- তোমাকে
- আমাকে এভাবে দেখার কি আছে
- তোমার দিকে আমি সারাদিন তাকিয়ে
থাকলেও ক্লান্ত হবো না।
- হুহ, ঢং....
দুজনে সারা বিকেল অনেক ঘুরাঘুরি করে
রাতে বাসায় ফিরলো, ও হ্যাঁ রাইসা কিছু
সপিং ও করলো।
দুজনেই অনেক ক্লান্ত, রাইসা একটু বেশি
তাই সে আগেই ঘুমিয়ে পড়েছে কিন্তু রাতুল
ঘুমায় নি, সে রাইসার ঘুমন্ত নিষ্পাপ পরীর
মতো মুখ খানা দেখছে।
সে প্রতি দিন রাইসার পরে ঘুমায় কারন সে
রাইসার ঘুমন্ত মুখের দিকে তাকিয়ে
থাকে।
তার দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকে কখন যে
রাত দুইটা বেজে গেছে টেরও পায় নি,
- তুমি এখনো ঘুমাও নি?
- ই এ মানে
- ই এ কি????
- তুমি এতো সুন্দর কেন?
- তোমার জন্য হি হি..
- তুমি কখনও হারিয়ে যাবে নাতো
- কখন ও না, এখন ঘুমাও।
রাতুলের ভয় হয় যদি কখনও রাইসা হারিয়ে
যায়, তখন সে আর বাচঁতে পারবে না। তাই
তাকে সবসময় চোখে চোখে রাখে।
পরের দিন দুপুরে শুয়ে আছে রাইসা, এমন
সময় কলিং বেল বেজে উঠাতে এগিয়ে
গেলো,
- তোমরা !!!!!! ( রাইসার বাবা, মা) একটু
তো ফোন করে আসতে পারতে ভেতরে
আসো।
- জামাই আসে নি এখনো? ( রাইসার
বাবা)
- এইতো এখনি চলে আসবে।
বাবা মা এসেছে তাই সে খুব ভালো করে
রান্না করছে।
অনেক্ষন ধরে তারা রাতুলের জন্যে
অপেক্ষা করছে কিন্তু তার আসার কোনো
নাম নেই, অফিসের কাজে আটকে গেছে।
অফিস শেষে কিছু সপিং করে বাসায়
আসলো।
- এতক্ষণে আসা হলো আপনার
- হুম, কি হয়ছে তাতে
- বাবা মা এসেছিলো
- ভালো।
রাতুলের কথায় নে রকম রেসপন্স না পেয়ে
রাইসা চলে আসলো।
রাত বারোটার বাজার কয়েকমিনিট
বাকি। আজ রাইসা জেগে আছে মন খারাপ
করে, ( রাতুল ও জেগে আছে তবে ঘুমের ভাব
ধরে)
প্রতি বছরই রাতুল তাকে প্রথম উইস করে
কিন্তু আজ কি যেনো হয়ছে, রাতুল
কোানো কথায় বলছে না। বারোটা বেজে
গেছে কিন্তু রাতুলের কোনো খবর নেই,
তাই সে মন খারাপ করে ঘুমিয়ে পড়লো।
রাইসার ঘুমানোর সাথে সাথেই সে ছাদে
গিয়ে সমস্ত কিছু ঠিক করে আসলো। রুমে
এসে রাইসা ঘুমন্ত অবস্থায় তুলে নিয়ে
সোজা ছাদে চলে আসলো।
ছাদে আসার পর যখন সাজানো ছাদ
দেখতে পেলো
- আমি কোথায়? স্বপ্নে দেখছি নাকি?
- নাহ, বাস্তবে।
- এতো কিছু কার জন্যে?
- অনলি ফর ইউ
- তাহলে বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত এমন
করলে কেনো?
- তোমাকে সারপ্রাইজ দিবো বলে
- ( রাইসা কাদতেছে)
- কি হলো কাদছো কেনো? ওহ, তোমাকে
তো উইসটাই করা হয় নি, """ হ্যাপি বার্থ
ডে টু ইউ "" আর এই নাও তোমার গিফট
( অফিস থেকে ফেরার সময় একটা শাড়ী
কিনে এনেছিলো)
- তুমি আমাকে এতো ভালবাসো?
- হুম, আমার থেকে তোমায় আমি
ভালবাসি বেশি। 

এক বাবার পাগলামি ও ছেলের ভালবাসা






শুভ্র

বাবার একমাত্র ছেলে।
অবাক হচ্ছেন? বাবা মায়ের না বলে শুধু বাবার বললাম কেন?
আসলে শুভ্রর মা নেই। জন্মের কয়েক বছর পরেই মারা গেছে। তখন থেকেই সে বাবার সাথেই থাকে। তার বাবা তাকে খুবই ভালো বাসে। কোনদিন মায়ের অভাব বুজতে দেয় নি। তার বাবা ছিলো একেবারে বন্ধুর মতো। সে সব কথা বাবার সাথে সেয়ার করতো।
.
ফারদিন সাহেব (শুভ্রর বাবা) একটা কলেজের প্রিন্সিপ্যাল। আর শুভ্র একটা মাল্টি ন্যাশনাল কম্পানির মেন্যাজার।
.
প্রতিদিন অফিস থেকে ফেরার পথে শুভ্র তার বাবাকে নিয়ে যায়।
.
এমনি একদিন শুভ্র তার বাবার জন্য কলেজের গেটের সামনে দাড়িয়ে।
হঠাৎ একটা মেয়ে কলেজ থেকে বেরুলো।
অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে শুভ্র।
.
একটা কালো শাড়ি পরেছে মেয়েটা। মুখে হিজাব। শুধু চোখ দুটো দেখা যাচ্ছে। চোখে কাজল দিয়েছে। একেবারে অপরুপ লাগছে মেয়েটাকে। কিছুতেই চোখ ফেরাতে পারছে না। শুভ্র তাকিয়ে আছে।
.
→খুব সুন্দর! না??
.
→ হ্যা খুব সুন্দর... (বলতে বলতে পিছনে তাকালো শুভ্র) .... বাবা তুমি! কখন এলে। (শুভ্র)
.
→ যখন সুন্দর জিনিস দর্শন করা হচ্ছিলো। তখন....(বাবা)
.
→ বাবা! তুমিও না। চলো দেরি হয়ে যাচ্ছে.....
.
→ হ্যা চল( বলেই গাড়িতে উঠলেন ফারদিন সাহেব)
গাড়িতে উঠেই ফারদিন সাহেব আবার শুরু করলেন.....
→ তোর চয়েসের তারিফ করতে হয়। আর তোদের দু'জন কে মানাবেও ভালো।
.
→ উফ! আবার শুরু করলে তুমি। আচ্ছা তার আগে বলো মেয়েটা তোমার কলেজ থেকে বেরুলেন কেন??
.
→ আরে ও তো আমাদের কলেজে নতুন কেমিস্ট্রি টিচার।
.
→ তাই নাকি! তা নাম টা কি??
.
→ কেন বলবো??
.
→ বাবা বলনা। প্লিজ প্লিজ প্লিজ প্লিজ প্লি........
.
→ আচ্ছা বলছি বলছি...... ওর নাম তারিন।
.
.
তার পরের দিন আবার শুভ্র দাড়িয়ে আছে। কিছুক্ষণ পর তারিন বের হল। শুভ্র আজও অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।আজ মেয়ে টা বেগুনি কালারের ড্রেস পরেছে। ধীরে ধীরে তারিন দৃষ্টি রেখার বাইরে চলে যাচ্ছে। শুভ্র তখনো তাকিয়ে আছে।
.
→ এই যে শুভ্র সাহেব। শুধু এইভাবে তাকিয়ে থাকলে হবে।
.
→ তো কি করব?
.
→ কি করব মানে। পেছন পেছন যা। অন্তত বাড়ি টা দেখে আয়।
অতপর শুভ্র ছুটতে লাগলো। মেয়েটা যেদিকে গেছে সেদিকে। কিন্তু কিছুদুর যেতেই একটা চার রাস্তার মোড় পেলো। কিন্তু তারিনকে কথাও দেখতে পেলো না। তাই হতাশ হয়ে ফিরে এলো।
.
→ কিরে পেলি? (বাবা)
.
→ দুর! কোনদিকে যে গেলো!
.
→ আচ্ছা সমস্যা নাই। কাল আবার যাবি। এখন চল। অনেক ক্ষিদে পেয়েছে।
.
→ হ্যা! চলো।
.
.
পরের দিন আবার শুভ্র দাড়িয়ে আছে।
কিছুক্ষণ পর তারিন বের হলো। পেছনে তার বাবাও। তাই শুভ্র বেশিক্ষন তাকিয়ে থাকতে পারলো না। কারন বন্ধুর মতো হলেও বাবা তো!
.
→ চল! চল!(বাবা)
.
→ চল মানে! কথাও যাবা নাকি??(শুভ্র)
.
→ হ্যা! বাড়ি টা দেখে আসতে হবে না।
.
→ তুমিও যাবা নাকি?
.
→ হ্যাঁ!.. কোন সমস্যা??
.
→ না কোন সমস্যা নাই!
.
→ তাহলে দাড়িয়ে আছিস কেন চল।
.
অতপর তারা তারিনের পিছু পিছু গিয়ে তারিনেরর বাসা টা চিনে আসলো।
তারপর প্রতিদিন শুভ্র তারিনের পিছু নেয়। ব্যাপার টা তারিন বুজতে পারে। এই ছেলেটাকে দেখলে কেন যানি খুব বিরক্ত লাগে। তাই শুভ্র দেখলেই একটা রাগি লুক নেয়। কেন যানি এই ছেলেটাকে তার বিরক্ত লাগে। প্রতিদিন কলেজের সামনে বখাটে ছেলেদের মতো দাড়িয়ে থাকে।
.
কেটে যায় আরও কয়েকটা দিন।
.
→ কি রে! বলেছিস?
.
→ কি?
.
→ তুই যে ওকে ভালোবাসিস?
.
→ না।
.
→ সেকিরে এখনো বলিশনি!
কালকেই গিয়ে বলবি!
পরের দিন সাহস করে শুভ্র তারিনের সাথে কথা বলতে যায়। কারন বাবা আজকেই বলতে বলেছে।
.
→ এই যে! শুনছেন?
.
তারিন শুভ্র কে দেখেই রাগি একটা লুক নিয়ে ওর সামনে গেলো। আজ ছেলেটাকে কিছু একটা বলা দরকার।
.
→ বলুন?
.
→ না মানে আপনার সাথে একটু কথা ছিলো!
→ বলতে বললাম তো!
.
→ জ্বি মানে .. আ আসলে..
.
→ কি মানে মানে করছেন...
.
→ না মানে আমি আপনাকে ভালবাসি। (চোখ বন্ধ করে)
.
ঠাস!
গালে হাত দিয়ে দাড়িয়ে আছে শুভ্র।
.
→ছি! আপনাকে তো দেখে ভদ্র ঘরের ছেলে মনে হয়। আচরন এরকম বখাটেদের মতো কেন। আপনার মতো জঘন্য লোকের সাথে দাড়িয়ে কথা বলতেও ঘৃনা হচ্ছে।
এই আপনার মা আপনাকে কি এইসব বলেছে। মেয়েদেরকে দেখলই ভালবাসি বলবি। আপনার বাবা মা আপনাকে ভদ্রতা শেখায় নি?...... যত্তসব।
আর কক্ষনো যেন আমার পেছনে না দেখি। ফালতু ছেলে কথাকার
.
কথা গুলো বলেই তারিন রাগে গজ গজ করতে করতে চলে গেলো।
.
এখনো গালে হাত দিয়ে নিশ্চুপ দাড়িয়ে আছে শুভ্র। চোখ দিয়ে অঝরে বৃষ্টি পড়ছে। তারিন তার ভালবাসাকে উপেক্ষা করেছে সে জন্য নয়। তার বাবা মাকে খারাপ বলেছে সে জন্য।
.
অন্ধকার রুম। রুমের মধ্যে একটি ছেলে। ছেলেটির চোখে জল। হাতে বেশ কয়েক টা ঘুমের ট্যাবলেট। ফোনেরর টর্চ জালিয়ে কি যেন লিখছে।
হ্যা এটা শুভ্রই। যে কি না কিছুক্ষন পরেই সুইসাইড করবে।
.
.
বাবা যানো! আমি না চলে যাচ্ছি। তাই বলে তুমি কিন্তু একটুও ভাববে না যে ওই মেয়েটা গ্রহন করে নি বলে চলে যাচ্ছি....
জানো ওই মেয়ে টা না তোমাকে আর আম্মুকে পচা বলেছে। কিন্তু আমি তো জানি আমার আব্বু কত্ত ভালো। আসলে আমার জন্যই এরকম হয়েছে। মেয়েটাকে অনেক বিরক্ত করেছি। তাই হয়তো...।
তুমি প্লিজ মেয়েটাকে বলিও যে i am sorry....
নিজের খেয়াল রাখবে। আর আমি চলে যাওয়া পর একদম কাদবে না কিন্তু।
I love you papa...I really love you.....
.
চিঠিটা শেষ করে শুভ্র হাতে থাকা ট্যাবলেট গুলো খুলতে লাগলো।
গুনে গুনে ৮ টা ট্যাবলেট খেয়ে নিলো।
হ্যা এইতো ঘুম আসছে। ধীরে ধীরে ঘুমের অতল সাগরে তলিয়ে যাচ্ছে।
.
পরের দিন শুভ্র নিজেকে হাসপাতালের বেডে পেলো। পাশে বসে আছে তার বাবা।
চোখগুলো ফুলে রক্তবর্ণ ধারন করেছে। নিশ্চই কাল সারারাত কেঁদেছে। নিশ্চই কাল সারারাত একটুও ঘুমায়নি।
.
চোখ মেলতে দেখেই ফারদিন সাহেব জিঙ্গেস করল....
→ এখন কেমন আছিস বাবা।
.
→ এইতো একটু ভালো।
.
→ এটা কেন করতে গেছিলি। তোরা মা ছেলে কি আমাকে একটু শান্তিতে বাঁচতে দিবি না। তখন তর মা চলে গেলো আমাকে একা করে। এখন তুই চলে যেতে চাইঝিস একবারও ভাবলি না আমার কি হবে আমি কি নিয়ে বাঁচবো।
.
→ সরি বাবা।
.
.
কয়েক দিন ধরে কিছু একটা মিস করছে তারিন। বড্ড খালি খালি লাগছে।মনে হচ্ছে হঠাৎ করে কিছু একটা হারিয়ে গেছে তার জিবন থেকে।
সেদিন কলেজ শেষে তারিন সেই যায়গায় গেলো যেখানে রোজ শুভ্র দাড়িয়ে থাকতো.
হঠাৎ পেছন থেকে কেউ বলে উঠলো..
.
→ কাউকে খুজছো?
.
তারিন পেছন ফিরলো। একি এতো প্রিন্সিপাল স্যার!
.
→ আরে স্যার আপনি?
.
→ হ্যাঁ! কাউকে খুজছো নাকি।
,
→হ হ হ্যাঁ... না মানে কাকে খুজবো।
.
→ শুভ্রকে মিস করছো না??
.
→ হ্যা. না মানে আপনি শুভ্রকে কিভাবে চেনেন??
.
→ আমি অর বাবা। অ তোমাকে সরি বলতে বলেছে।
জানো তারিন! অ তখন ছোট। তখন অর মা মারা যায়। তারপর থেকে আমি ওকে মানুষ করি । মায়ের ভালোবাসা কোনদিন দিতে না পরলেও যতদুর সম্ভব চেস্টা করেছি।
যেদিন ও তোমাকে প্রথম দেখেছিলো সেদিন নাকি অর মায়ের কথা মনে পড়েছিলো। তাই রোজ তোমাকে দেখার জন্য ছুটে যেত। কিন্তু তুমি অর বাবা মা কে নিয়ে যেটা সেটা মেনে নিতে পারে নি।
তাই এখন হাসপাতালে।
→ হাসপাতালে কেন??
.
→ বাদ দাও! ও হ্যা অ বলেছে আর কোনদিন তোমাকে বিরক্ত করবে না।
আচ্ছা আজ তাহলে আসি!!
.
রাস্তায় এলোমেলো হাটছে তারিন । কি করছে সে এটা। কিছু না জেনে সে ছেলেটাকে এমন কিছু বলে ফেললো। আচ্ছা ছেলেটা হাসপাতালে কেনন। সুইসাইড করতে যায় নি তে। নাহ! কিচ্ছু ভাবতে পরছেনা।
.
আজ ১ সপ্তাহ পর আবার শুভ্র তার বাবা কে নিতে এসেছে । তবে আজ সে গাড়ির মধ্যেই বসে আছে। কারন যাতে তারিন না দেখতে পায়।
.
কলেজ থেকে বের হয়েই তারিন দেখতে পেলো শুভ্র গাড়িটা পার্ক করা। কিন্তু শুভ্র কে দেখা যাচ্ছে না। তার মানে গাড়ির মধ্যে
দৌড়ে গাড়ির কাছে গেলো তারিন।
শুভ্র অবাক চোখে+ ভয়ে তাকিয়ে আছে। না জানি আবার ঝাড়ি শুরু করে।
→ এই বের হন গাড়ি থেকে। (অনেকটা রেগে)
.
শুভ্র ভয়ে ভয়ে বেরিয়ে এলো। সাথে সাথে তারিন কলার চেপে ধরে বললো.......
.
→ ওই! সুইসাইড করতে গেছিলেন কেন।
.
→ মা মা মানে.....
.
→ কি মানে মানে করছো। আর কয়েকদিন আসো নি কেন। জানো কত্ত মিস করছি তোমাকে?
→ তাহলে তুমি আমার আব্বু আম্মুকে পচা বললা কেন। তোমার সাথে কথা বলব না।
.
→ সরি ! আমি আসলে জানতাম না। এই যে কান ধরছি।
.
→ এই এই কান ধরছো কেন। সবাই দেখছে তো।
.
→ তাতে তোমার কি?
.
→ আমার অনেক কিছু! কারন আমি তোমাকে ভা.....
.
→ কি আটকে গেলে কেন?
.
→ ভালোবাসি.....(বলেই গালে হাত দিলো)
.
→ এই গালে হাত দিলে কেন?
.
→ যদি চড় মারো!
.
→ হাত সরাও বলছি!
.
শুভ্র হাত সরাতেই তারিন ওর গালে এতটা টুট টুট একে দিলো। তারপর লজ্জায় বুকে মুখ লুকালো।
.
→ বলছি এগুলা বিয়ের পর করলে হয় না?? ( বাবা)
.
→ স্যার আপনি! (লজ্জায় মাথা নিচু করে)
.
→ এই বিয়ে ক্যানসেল।( শুভ্র)
.
→ কেন? (তারিন)
.
→ তুমি বাবাকে স্যার বলছো কেন?? সরি বলো!
.
→ সরি বাবা!!